ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : র্যাব সদস্য পরিচয়ে তিনজন পান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনায় শ্রমিকদলের নেতাসহ তিনজন ভূয়া র্যাব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের অপর সহযোগিরা পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রামে। অপরদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ভূয়া র্যাব সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের বাগধা ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মোল্লাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে আগৈলঝাড়া উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আল সজল আলাল ও সাধারণ সম্পাদক সিকদার মো. লিটন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. অলিউল ইসলাম জানিয়েছেন, আমবাড়ি এলাকা থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে র্যাব পরিচয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় থানা পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের গায়ে র্যাবের কোটি পড়া ছিলো।
ওসি আরও জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ মোল্লার ছেলে ও বাগধা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মোল্লা (৪০), একই উপজেলার উত্তর চাঁদত্রিশিরা গ্রামের দুলাল মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা (২৮) এবং বাকাল ইউনিয়নের পূর্ব পয়সা গ্রামের নগেন হালদারের ছেলে নরত্তোম হালদার (৩৪)।
অভিযানের সময় গ্রেপ্তারকৃতদের অপর সহযোগি সুমনসহ অন্যান্যরা হ্যান্ডকাফ, অস্ত্র ও মোটরসাইকেল নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। ওসি বলেন-এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী বিপুল ঢালী বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত তিনজন ভূয়া র্যাব সদস্যসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সৌমেন বিশ্বাস এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে আমবাড়ি গ্রামের খগেন ঢালীর ছেলে বিপুল ঢালী, অপর পান ব্যবসায়ী পলাশ মন্ডল ও চঞ্চল কর্মকার পান বিক্রি করে বাড়িতে ফিরছিলেন।
পথিমধ্যে রাত সোয়া নয়টার দিকে স্থানীয় নিরঞ্জন ঢালীর মুদি দোকানের পূর্ব পাশে পৌঁছলে র্যাবের কোটি গায়ে, পিস্তল ও হ্যান্ডকাপ হাতে ৫/৬ জন ব্যক্তি র্যাব পরিচয়ে তাদের পথরোধ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে র্যাব পরিচয় প্রদানকারীরা তল্লাশীর নামে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা নগদ অর্থ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়ার পর র্যাব পরিচয় দেয়া ব্যক্তিদের ওপর ব্যবসায়ীদের সন্দেহ হয়। তাৎক্ষনিক তারা বিষয়টি মোবাইল ফোনে থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে বাটরাগামী ব্রীজের ওপর থেকে র্যাবের কোটি পরিহিত উল্লেখিত তিনজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভূয়া র্যাব সদস্য বলে স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়। অভিযানের সময় গ্রেপ্তারকৃতদের সহযোগি সুমনসহ অন্যান্যরা পিস্তল, হ্যান্ডকাফ ও মোটরসাইকেলসহ কৌশলে পালিয়ে যায়।